“শহরের ভিতরেই আরও এক ছোট্ট শহর। বাকি দুনিয়া যে আদব কায়দায় চলে, বাংলাদেশের এই যৌনপল্লীর চলন গমন সেইসব কিছু থেকে একেবারেই আলাদা। রোজ সূর্য ওঠা, রাতের আকাশে চাঁদ ওঠা সবই যেন অন্য রকমের। যৌনপল্লীর অলিগলিতে সূর্য যেন প্রতিফলিত আলো, আলো সরাসরি এখানে আসে না, তাই তো এত অন্ধকার”, বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের কাদাপাড়ার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে এই কথাগুলোই বলছিলেন জার্মানির চিত্র সাংবাদিক সান্দ্রা হোয়েন।-জি নিউজ।
একটি ইংরেজি দৈনিক- NEXTSHARK পত্রিকায় তিনি তাঁর তোলা বাংলাদেশের কাদাপাড়ার যৌনপল্লীর সমস্ত আলোকচিত্রগুলোকে প্রকাশ করেন। আর সেখানেই এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর সমস্ত অভিজ্ঞতাও ব্যক্ত করেন।
২০০ বছরের প্রাচীন যৌনপল্লী। মুসলিম প্রধান বাংলাদেশেই আছে এশিয়ার দন্যতম বৃহৎ যৌনপল্লী, কার জানা ছিল? বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের এই যৌনপল্লী নিয়ে কখনই বিশেষ কোনও আলোচনা কখনই হয়নি। লোকচক্ষুর একেবারে আড়ালেই থেকেছে কাদাপাড়া। অন্তত সোনাগাছি যেভাবে প্রায়ই খবরে আসে কাদাপাড়ার ক্ষেত্রে তেমনটা একেবারেই হয় না।
বাংলাদেশের যৌনপল্লী নিয়ে বাংলাদেশের খবরের কাগজও বেশ উদাসীন! সেখানে যে মানুষগুলো দেহ ব্যবসায় জড়িত তাঁদের নিয়ে তেমন কোনও উন্নয়নমূলক কাজও সরকার করেনি। করলেও তা একেবারেই চোখে পড়ার মত নয়। সারা দেশে নারী যে অধিকারের অধিকারী কাদাপাড়ার যৌনপল্লীর দেহব্যবসায়ীরা সেই সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত। মূলত হত দরিদ্র পরিবারের মেয়েরাই জীবন বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছেন কাদাপাড়ায়। অনেকেই আবার নারীপাচারের শিকার। উপায় না পেয়ে যৌনপল্লীতেই জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। এই যৌনপল্লীর কর্মীরা প্রতিদিন ১০০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করেন।
চিত্র সাংবাদিক সান্দ্রা হোয়েন বলছেন, “দেহ ব্যবসায় যে নূনতম নিয়ম কানুন সব দেশে মানা হয় বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের কাদাপাড়ায় সেটাও মানা হয় না। ১৮ বছরের থেকেও কম বয়সীদের এখানে দেহ ব্যবসায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা আইনত অপরাধ। ১২ থেকে ১৪ বছরের মেয়েদের এখানে যেভাবে রাখা হয় তা এককথায় নারকীয়”।